আ’লীগ কোনো অবস্থাতেই একতরফা ভোট চায় না – ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘একেপেশে খেলা’ বা ‘ফাঁকা মাঠে গোল করার’ কোনো পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়ন বাতিলের যে ঘটনা ঘটেছে, এটা নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের কারণেই হয়েছে। এটা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ব্যাপার। এখানে আওয়ামী লীগের কিছুই করার নেই।

গতকাল রোববার সারা দেশে একযোগে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপি ও জোটের অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী লড়াইয়ের মাঠ থেকে ছিটকে পড়েছেন। মনোনয়ন বাতিলের এবার রেকর্ড হয়েছে। অতীতে আর কখনই এত বেশি সংখ্যক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়নি।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্র অনুযায়ী, সারা দেশের ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই শেষে দুই হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন।

সারা দেশে যে সংখ্যক মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তাতে দেখা গেছে বেশিরভাগই বিএনপির মনোনয়নপত্র। ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ লেবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, সরকারের বিজয়ের পথ সুগম করতেই ২০ দলীয় জোটের ৮০ প্রার্থীকে আজ মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে।

অবশ্য যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আজ সোমবার থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন শুনানি করে আপিল নিষ্পত্তি করবে ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর।

আজ সোমবার সকালে ধানমণ্ডিতে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মনোনয়নপত্র বাতিল নিয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই আমরা একতরফা কোনো অবস্থা সৃষ্টি করে নির্বাচনে লড়াই করতে চাই না। এটা একপেশে খেলা হোক, এটা একপেশে ম্যাচ হোক- এটা আমরা চাই না।’

‘গণতন্ত্র হচ্ছে দুই চাকার বাইসাইকেল’- এমনটা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘একটা চাকার অপজিশন আরেকটা চাকা। এখানে কে অপজিশন হবে সেটা গণমানুষ ঠিক করবে। কিন্তু এখানে অন্যদের ঠেকিয়ে, আটকে রেখে আমরা একা নির্বাচন করব, ফাঁকা মাঠে গোল দেব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোটেই এ ধরনের ইচ্ছে পোষণ করেন না। এটা আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে, দেশবাসী, জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই।’

‘আমাদের তো এই দেশেই থাকতে হবে। জনগণের মাঝেই থাকতে হবে। আজকে একটা কথা বললাম রাজনীতিবিদ হিসেবে, একটা রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে, এই কথার যদি ২৫-২৬ দিন পরে ব্যত্যয় ঘটে, তাহলে মানুষ তো এটা মনে রাখবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘কাজেই ফাঁকা বুলি, ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। যা সত্য তাই বলছি, আমরা একটা ক্রেডিবল ইলেকশন করতে চাই, একটা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আমরা কতে চাই। কারণ, গত নির্বাচনে বিএনপি অনুপস্থিত থেকে একটা সমস্যা সৃষ্টি করেছে, আপাতদৃষ্টিতে। পরবর্তী সময়ে অবশ্য, এই পার্লামেন্টের সদস্যই স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবের হোসেন চৌধুরী ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনে (সিপিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।’

‘এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশে-বিদেশে সবার দৃষ্টি রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই এই নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষুণ্ণ হোক সেটা আমরা চাই না’, যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *